ইন্টারনেট বিশ্বের সেতুবন্ধন প্রবন্ধ রচনা | ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধা
ইন্টারনেট বিশ্বের সেতুবন্ধন: ইন্টারনেট আধুনিক বিজ্ঞানের একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার। বর্তমান বিশ্বের বহুল আলোচিত গতিময়তার এক মাইলফলক হচ্ছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে গবেষণার কাজে সংগ্রহ করা যায় নতুন নতুন তথ্য, জেনে নিতে পারে তার সমস্যার সমাধান এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম উৎকর্ষ সাধন হয়েছে এর বদৌলতেই।
.jpg)
ইন্টারনেট বিশ্বের সেতুবন্ধন প্রবন্ধ
ইন্টারনেট কী : ইন্টারন্যাশনাল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভিস বর্তমানে ইন্টারনেট নামে পরিচিত। নেটওয়ার্কভূক্ত কম্পিউটারসমূহকে অন্যান্য নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারের সঙ্গে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলাই ইন্টানেটের কাজ। নেটওয়ার্কসমূহ একত্র হয়ে পৃথিবীব্যাপী যে নেটওয়ার্ক সিস্টেম তৈরি করেছে, তাকেই ইন্টারনেট বলে।
ইন্টারনেটের প্রকারভেদ ঃ ব্যবহারকারীগণ দুভাবে ইন্টারনেটের গ্রাহক হতে পারে। প্রথমটি হলো অনলাইন ইন্টারনেট। টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে সরাসরি কম্পিউটারের ইন্টারনেটের অন্য যে-কোনো সার্ভিস প্রভাইডারের সঙ্গে যুক্ত করার পদ্ধতিকে অনলাইন ইন্টারনেট বলা হয়। তাতে ব্যবহারকারীগণ যে-কোনো সময় অন্য যে-কোনো প্রভাইডারের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে।
এ ছাড়াও IPACCES পদ্ধতিতে সরাসরি অনলাইন ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া যায়। কিন্তু এ পদ্ধতি অতি ব্যয়বহুল হওয়ায় সাধারণ গ্রাহকগণ তাতে আগ্রহবোধ করেন না।
দ্বিতীয়টি হলো অফলাইন ইন্টারনেট, যা ই-মেইল নামে পরিচিত।
এ প্রক্রিয়ায় গ্রাহকগণ নিকটবর্তী কোনো সার্ভারকে মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করে বলেই এটাকে অফলাইন ইন্টারনেট বা ই-মেইল বলা হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে গ্রাহকগণ কম খরচে অফলাইন বা ই-মেইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে।
ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধা ঃ ইন্টারনেটের মাধ্যমে নানারকম সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন- নিউজ গ্রুপ একটি তথ্য বা সংবাদ প্রদানকারী সংস্থা। ইন্টারনেটে নিউজ গ্রুপ এর বই ব্যবহার করে বিশ্বের খবরাখবর জানা যায়। লেখাপড়া ও গবেষণার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হলো যথার্থ বই। বিশেষ করে গবেষণাধর্মী বইয়ের জন্য অনেককে বিদেশে যেতে হয়।
কিন্তু ইন্টারনেটের মাধমে বাংলাদেশে বসে 'আমেরিকার ইউনাইটেড স্টেট অব কংগ্রেস' বা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিসহ বিশ্বের যে-কোনো দুষ্প্রাপ্য বই পড়া এবং তথ্যাদি জানা যায়। এর সাহায্যে একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে আরেক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত লেনদেন সম্পাদন করা যায়।
জটিল কোনো মামলার ক্ষেত্রে মানুষ আইনের পরামর্শের জন্যে বিদেশের আইনজ্ঞদের শরণাপন্ন হয়। কিন্তু এখন আর এজন্যে বিদেশ না গেলেও চলবে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই যে-কোনো পরামর্শ লাভ করা যায়। ভ্রমণের ক্ষেত্রেও ইন্টারনেট অত্যন্ত সহজ পথের সন্ধান এনে দিয়েছে।
অফিসের হাজারো ফাইলের মধ্যে থেকে প্রয়োজনীয় ফাইলটি খুঁজে বের করা যায় ইন্টারনেটের Archi পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে। ইন্টারনেটের সুবাদে ঘরে বসেই উন্নত চিকিৎসা লাভ করা যায়। বর্তমানে ব্যাংকেও ইন্টারনেট ব্যবহৃত হচ্ছে। এভাবেই ইন্টারনেট বিভিন্ন কাজের এক সহজ মাধ্যম হিসেবে সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
উপসংহার :
বিংশ শতাব্দীর এক বিস্ময়কর প্রযুক্তি ইন্টারনেট। আশা করা যায়, একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই এ প্রযুক্তির বিস্তার ঘটবে। ফলে তথ্য আদান-প্রদান, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, যোগাযোগসহ সকল ক্ষেত্রে ইন্টারনেট এক মহাবিপ্লবের সূত্রপাত ঘটাবে। বিশ্বের সমস্ত কঠিন কাজ মানুষের হাতের মুঠোয় বন্দি হয়ে যাবে। উন্নত বিশ্বের সাথে সাথে তৃতীয় বিশ্বও তখন এগিয়ে যাবে অগ্রগতির দিকে।