বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য ফলচাষ প্রবন্ধ রচনা | দামি ফলের চাষ

বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য ফলচাষ: আয়তনে বিশ্বের অন্যতম ছোট দেশ বাংলাদেশ ফল উৎপাদনে সফলতার উদাহরণ হয়ে উঠেছে। এ মুহূর্তে বিশ্বে ফলের উৎপাদন বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হারের রেকর্ড বাংলাদেশের। আর মৌসুমি ফল উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য ফলচাষ প্রবন্ধ রচনা
 

২০ বছর আগে আম আর কাঁঠাল ছিল এই দেশের প্রধান ফল। এখন বাংলাদেশে ৭২ প্রজাতির ফলের চাষ হচ্ছে। আগে হতো ৫৬ প্রজাতির ফল চাষ ।


বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য ফলচাষ

বাংলাদেশ আয়তনে বিশ্বে ৯৪তম; কিন্তু জনসংখ্যায় অষ্টম। সবচেয়ে কম জমি, আর বেশি মানুষের এই দেশ ফল উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় উঠে এসেছে। একই সঙ্গে নিত্যনতুন ফল চাষের দিক থেকেও বাংলাদেশ সফলতা পেয়েছে। এত কম আয়তনের দেশ হয়েও ফল চাষে জমি বৃদ্ধির দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। বছরে ১০ শতাংশ হারে ফল চাষের জমি বাড়ছে।

গত ১০ বছরে দেশে আমের উৎপাদন দ্বিগুণ, পেয়ারা দ্বিগুণের বেশি, পেঁপে আড়াই গুণ এবং লিচু উৎপাদন ৫০ শতাংশ বেড়েছে। চার-পাঁচ বছরের মধ্যে নতুন ফল ড্রাগন ও অ্যাভোকাডো এবং দেশি ফল বাতালিলেবু, তরমুজ, খরমুজ, লটকন, আমড়া ও আমলকীর মতো পুষ্টিকর ফলের উৎপাদনও ব্যাপক হারে বাড়ছে। এসব ফলের প্রায় পুরোটাই দেশে বিক্রি হচ্ছে। কোন ফলে বাংলাদেশ কী অবস্থানে ঃ


কাঁঠাল ঃ কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ, ১০ লাখ টন। পুষ্টিমানের দিক থেকে অন্যতম সেরা এই ফলের আমদানি খুব দ্রুত হারে বাড়াচ্ছে চীন। তারা মূলত উৎপাদনে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে কাঁঠাল আমদানি করে। জাপান, মালয়েশিয়ার মতো পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো কাঁঠাল আমদানির দিকে ঝুঁকছে।

আম ঃ এফএও-র হিসাবে, গত ১৮ বছরে বাংলাদেশে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি হারে আমের চাষ বেড়েছে। বছরে ১৬ শতাংশ হারে আমের উৎপাদন বাড়ায় এর মাথাপিছু ভোগের পরিমাণ ১০ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। ১০ বছর আগে বিশ্বের আম উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল দশম। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সপ্তম অবস্থানে উঠে এসেছে। দেশের ফল থেকে আসা পুষ্টির চাহিদার বড় অংশের জোগান দেয় আম ।

পেয়ারা ঃ এফএও-র হিসাবে, পেয়ারা উৎপাদনে বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে। এই অর্জন হয়েছে গত ১০ বছরে। ২০০৭-০৮ সালে দেশে পেয়ারা হয়েছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার টন। চলতি অর্থবছরে তা প্রায় ৫ লাখ ১৬ হাজার টনে উন্নীত হয়। দেশের সাতটি কোম্পানি বর্তমানে পেয়ারার জুস তৈরির জন্য প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ থেকে পেয়ারা ও পেয়ারার জুস রপ্তানিও হচ্ছে।

নতুন ফলে নতুন আশা : কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে চলতি বছর ১ কোটি ২১ লাখ টন ফল উৎপাদিত হয়েছে। ১০ বছর আগের তুলনায় উৎপাদন ১৮ লাখ টন বেড়েছে। চাষের জমির দিক থেকে সবচেয়ে বেশি জমিতে চাষ হচ্ছে কলা। তারপর যথাক্রমে আম, পেঁপে ও কাঁঠাল । সবচেয়ে দ্রুতহারে বাড়ছে পেয়ারা ও লিচুর আবাদ।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url