আমার প্রিয় মানুষ মা রচনা | আমার প্রিয় ব্যক্তি মা - amar ma rochona

আমার মা বাংলা রচনা

আমার প্রিয় ব্যক্তি মা ঃ এই পৃথিবীতে সন্তানের সবচেয়ে আপনজন হলেন তার মা। সন্তানকে গর্ভে ধারণ, জন্মদান, তার বেড়ে থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত একজন মা-ই সন্তানের জন্য সবচেয়ে বেশি সময় দিয়ে থাকেন। মায়ের সান্নিধ্যে থেকেই সন্তান প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে। 


মায়ের এই স্নেহময়ী রূপের সঙ্গে আর সবার মতো আমিও পরিচিত বলে পৃথিবীতে আমার মা-ই আমার সবচেয়ে প্রিয় শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মানুষ । আমার প্রিয় মানুষ মা রচনা | আমার প্রিয় ব্যক্তি মা

আমার প্রিয় ব্যক্তি মা

আমার প্রিয় ব্যক্তি মা ঃ আমাদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় যাঁকে আমরা সবচেয়ে বেশি সময় কাছে পাই, তিনি কিন্তু একজন মা । আমার বাবাও আমার কাছে পরম শ্রদ্ধার পাত্র, তারপরও মাকে সারাক্ষণ কাছে পাই বলে আমার যত আদর-আবদার- আহ্লাদ-সবই মাকে ঘিরে থাকে।


গুণাবলি ঃ আমি আমার মা-বাবার একমাত্র সন্তান। কিন্তু আমার ছয় বছর বয়সের সময় বাবা চাকরিসূত্রে বিদেশে যান। তিনি বছরে মাত্র এক মাসের জন্য দেশে আসেন। যদিও বাবার সঙ্গে টেলিফোনে মাঝেমধ্যেই কথা হয়, তবু মাকেই আমি সারাক্ষণ কাছে পাই। 


মা এমনভাবে আগলে রেখে আমাকে বড় করে তুলেছেন যে, বাবার অভাব তিনি বুঝতেই দেন না। তিনি একা ঘরে-বাইরের যাবতীয় দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করে আমার দেখভাল করেন। আমার পড়াশোনার হাতে খড়িও মায়ের কাছেই। 



এখনো মনে পড়ে, মা আমাকে বই কিনে দেওয়ার আগে অক্ষর পরিচয়ের জন্য প্লাস্টিকের বিভিন্ন রঙের বাংলা-ইংরেজি বর্ণমালা, অঙ্ক শেখানোর জন্য প্লাস্টিকের ইংরেজি-বাংলা সংখ্যা ইত্যাদি কিনে দিতেন। ওগুলো দিয়ে খেলতেই আমি তিন বছর বয়সের মধ্যে সব অক্ষর-সংখ্যা চিনে ফেলি। 


তারপর মা যখন ছড়া-ছবির বই কিনে দিলেন, সেগুলো বানান করে একা একাই পড়তে পারতাম । এখনো মা আমার পড়া তৈরিতে সাহায্য করেন, প্রতিদিন স্কুলের ডায়েরি চেক করেন এবং প্রয়োজনে বিষয়- শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসব দায়িত্ব পালনের এক দিনের জন্যও তাঁর শৈথিল্য দেখি নি। 


এ কারণে আমি কখনো পড়ালেখায় ফাঁকি দিতে পারি নি। আমার লেখাপড়ার প্রতি দায়িত্ব পালন ছাড়া মা সংসারের আরও যে-সব দায়িত্ব পালন করেন, তা উল্লেখ না করলে আমার মায়ে গুণাবলির প্রকাশ সম্পূর্ণ থেকে যায়। আমার কোনো ভাইবোন না থাকলেও আমাদের পরিবারে আমার দাদা-দাদি থাকেন। 


আমার মা নিজে তাঁদের সেবাযত্ন করেন এবং আমাকেও তাঁদের সেবাযত্ন করতে শিখিয়েছেন ' আমাদের সবাইকে খাইয়ে তারপর তিনি খেতে বসেন। আমি যাতে অসুস্থ হয়ে না পড়ি, সে জন্য তিনি সবসময় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন করেন। আর অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত নিরাময়ের জন্য সবরকম বিধিব্যবস্থা করেন। 

 

প্রিয় মা আমার মা একজন দায়িত্বশীলা মহিলা। তিনি সুচারুভাবে হাসিমুখে সব দায়দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কোনো দিন তাঁকে কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করতে শুনি নি। নিজের সুখ-সুবিধার চেয়ে অন্যের সুখ-সুবিধার দিকে দৃষ্টি আমাকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধশীল করে তোলে। 


তিনি আমাকে সবসময় ভালো মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা দেন। আমার পড়ালেখায় যাতে একঘেয়েমি না আসে, সে জন্য আমার পছন্দের গল্পের বইগুলো কিনে দেন। এসব কারণে তিনি আমার প্রিয় ও আদর্শ মা হয়ে উঠেছেন।


উপসংহার

শিশুকাল থেকে মা আমাকে পরম যত্নে যেভাবে বড় করে তুলেছেন, তাঁর প্রতিদিনের কাজকর্মে সেটি আমি অনুভব করি। তাই আমিও যতটা পারি মায়ের কাজকর্মে সাহায্য করি। তিনি যাতে আমার কোনো কথায়-আচরণে কষ্ট না পান, সে জন্য সচেতন থাকি। আমি বিশ্বাস করি, মায়ের কথামতো চললেই একদিন সত্যিকারের মানুষ হব। আমার প্রিয়


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url